ঢাকা, ১৩ এপ্রিল (ঢাকা পোস্ট) : যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেওয়া বক্তব্য বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মত প্রকাশ করেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।
সেহেলী সাবরীন বলেন, আমি এটা মনে করি না। আমরা-তো মিটিং করে আসলাম। আমরা আমাদের যেসব এজেন্ডা ছিল, সবকিছু সুন্দরভাবে আলোচনা করে এসেছি। জাতীয় সংসদে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আনা ১৪৭ বিধির সাধারণ প্রস্তাব ও অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমেরিকা চাইলে যেকোনো দেশের ক্ষমতা উল্টাতে-পাল্টাতে পারে। সরকারপ্রধানের এমন মন্তব্যের ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পরে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের দুই দিন আগে তার তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে ‘ভণ্ডদের আখড়া’ বলে মন্তব্য করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বাহিনীর সাত জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তোলা নিয়ে ল’ ফার্ম নিয়োগের অগ্রগতির বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা চলমান রয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা প্রত্যাশা করি, যে রাষ্ট্র এ নিষেধাজ্ঞাটা দিয়েছে, তারা প্রসেসটাকে দ্রুত এক্সিকিউট করবে এবং আমরা খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত পাব। ল ফার্ম নিয়োগের বিষয়ে মন্ত্রণালয় এবং মার্কিন দূতাবাস কাজ করছে।
মোমেন-ব্লিঙ্কেনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জিএসপি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেহেলী সাবরীন বলেন, ইকোনোমিক পার্টনারশিপ ডায়লগে জিএসপি নিয়ে আলোচনা হয় এবং এ আলোচনা সবসময় চলমান রয়েছে। সামনের দিনেও এ ব্যাপারে আলোচনা হবে। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ কাজ চলমান থাকবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের আইন প্রণয়ন একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে এবং সংসদে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়। আমরা বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা থেকে ডিএসের ব্যাপারে বিভিন্ন সুপারিশ পাচ্ছি। আমাদের আইন-প্রণেতারা যদি মনে করেন, কোনো আইনের সংশোধনী প্রয়োজন; তখনই তারা সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, যে কোনো দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হলে অনেক সময় নির্বাচন ইস্যুতেও আলোচনা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নির্বাচন নিয়ে বলছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে ফেরতের বিষয়টি বারবার বলে আসছি। আমরা আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা বা পদ্ধতির বিষয়টি তাদের সঙ্গে শেয়ার করি।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে আসছে, আমাদের নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। অনেক দেশ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে আলোচনা করছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan